অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপির আনেদালনের ডাককে ‘আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন’ অভিহিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ নিয়ে তার দলের কোনো মাথাব্যথা নেই।মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত বন্যার্তদের অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।বিএনপির আন্দোলনের ডাক প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিসের আন্দোলন? কোথায় হবে আন্দোলন? আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ঈদের পর। ডাক দিয়েছেন পরীক্ষার পর। এখন আবার ডাক দিয়েছেন বন্যার পর। দেখতে দেখতে ১৩ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর?
‘তাদের আন্দেলনের ডাক আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন। এ নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাব’, বলেন তিনি। দুর্যোগে, বিপদ-আপদে মানষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কাছে ছুটে যাওয়া; বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এই ঐতিহ্য ধারণ করে যাচ্ছে, দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ এখনো সবার আগে অসহায় মানুষের আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত হয়। যারা বলেন, আওয়ামী লীগ সিলেটের বন্যায় নির্বিকার, কিছু করেনি; যারা ঢাকায় বসে লিপ সার্ভিস দেয়, যারা ভাষণ শিল্পের বিকাশ ঘটায়, তাদের একটা শিল্প আছে ভাষণ শিল্প। ঘরে বসে ফেসবুকিং করে। তারাই এই ধরনের কথা বলতে পারে। তারা ঘটনাস্থলে যায় না, মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। যদিওবা কখনো যায়, সেটি নামমাত্র ফটোসেশনের জন্য।’
বিএনপির ত্রাণ তৎপরতার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেখলাম যে, মুড়ি আর কলা বিতরণ করছে। এটা হচ্ছে তাদের ত্রাণ কার্যক্রম। এটা আমরা সব সময় দেখে আসছি। তাদের ত্রাণ তৎপরতা এক ধরনের ত্রাণবিলাস।’
আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতার তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত বন্যায় ৯ হাজার মেট্রিক টন চাল প্রদান করা হয়েছে। দেড় লক্ষ শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং নগদ ১১ কোটি টাকা ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহিবল থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সরকার থেকে গৃহ নির্মাণের জন্য সিলেট জেলার ৫ হাজার পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৫ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বন্যাকবিলত এলাকায় সিলেট অঞ্চলে গিয়েছেন। আজকে যারা মিথ্যাচার করে, তাদের কিছু বলতে চাই না। এর জবাব আমরা কাজ দিয়ে দেবো।বিএনপি নেতাদের রাজনৈতিক সৌজন্যতাবোধ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।তিনি বলেন, ‘তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করে। তারপরও বলছে, তাদের নেতাকর্মীদের না কি হয়রানি করা হচ্ছে। ফখরুল সাহেব, আপনারা যেভাবে আওয়ামী লীগ নেত্রীকে যে ভাষায় আক্রমণ করেন, এটা কোনো ভদ্রলোকের ভাষা নয়, রাস্তার ভাষা। তারা রাস্তার ভাষায় কথা বলে। আমরা রাজনীতির ভাষায় কথা বলি।যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের দামে অস্থিতিশীলতার বিষয়টি তুলে ধরে এ নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্যমূলক নীতি গ্রহণ করার কারণে আমাদের এখনো এমন কোনো সংকট আসেনি। তবে, সংকট আসতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের রেশ কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। কাজেই আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।